গোয়না বোড়ী
খুব ছোটবেলায় বাবা একবার একটি বাক্স এনে আমার হাতে দিয়ে বলেছিলেন বলোতো দেখি এতে কি আছে? কি উত্তর দিয়ে ছিলাম মনে নেই তবে বাক্স খুলে যে সাদা আলপোনার মত জিনিসগুলি দেখেছিলাম সেগুলির নাম গোয়না বোড়ী। কি ভীষন সুন্দর নক্সা কেবল কড়াইয়ের ডাল বাটা দিয়ে বানানো সম্ভব তা না দেখলে বিশাষ করা যায় না। বাবা তখন কাজের সুত্রে প্রায় মেদীনীপুর জেতেন ও মাঝে মাঝেই গোয়না বোড়ী আনতেন। আর ছোট্ট আমি আশা করে বোসে থাকতো কখন ঐ বাক্স ভরা আলপোনা বাবা এনে আমার হাতে দিয়ে বলবেন "এই নাও তোমার অলঙ্কার বুটিকা।"সত্যজীৎ রায়ের প্রিয় এই পদটি শুধু আমার কেন অনেকেরি অতি পছন্দের খাদ্যতালীকায় স্থান পেয়ে ছীল। আগুন্তুক ছবীটিতে সত্যজীৎ রায় একটি দৃষ্যতে এই বোড়ীর প্রসঙ্গ তুলে ধরে ছিলেন।
মেদিনীপুর জেলার তোমলুক মহোকুমার মোনিয়া নামক স্থানের ভীষণ প্রসিদ্ধ কুঠীরশিল্প হল এই গয়না বড়ী। বাড়ীর মেয়ে বউরা ঘরে ঘরে তৈরী করে এই গয়না বড়ী। খেতে অত্যন্ত সুশাদু ও অসম্ভব মুচমুচে গয়না বড়ী এক যুগে বাঙালীর উৎসবের রন্ধন তালীকার অছেদ্দ অংশ ছীল, আজ অবস্য খুব কম লোকই এর সম্বন্ধে জানে। অন্যন্ন এই শীল্প আজ লুপ্ত প্রায়। আধুনীক এই সমাজে বড়ী দেওয়ার মত সময় খুব কম ঘৃহিনীর আছে তার ওপর গয়না বড়ী দেওয়ার মত নীপুন শীল্পকে করায়ত্ত করা সকলের দ্বারা সম্ভব নয়, কাজেই শীল্পটি লুপ্ত হওয়ার দোরগোরায় উপস্থিথ। এই শীল্পটির মৃতপ্রায় অবস্থার আর একটি কারণ হল গয়না বড়ীর আসম্ভভ পলকা হওয়া। কড়াইয়ের ডাল দিয়ে তৈরী এই বড়ী অতি সহযেই ভেঙ্গে যায়, তাই গয়না বড়ী দেওয়া হয় পোস্ত ছড়ানো থালায় যাতে সহজেই তোলা যায়। তবে আমার মনে হয় সঠীক ব্যাবস্থা নিলে এখনও মৃতপ্রায় এই শীল্প নব জীবন লাভ করতে পারে। মল কালচারের এই যুগে গয়না বড়ীর মত অসামান্য শীল্পের বাজার পেতে কোন অসুবিদ্ধাই হবে না বলে আমার বিশাষ। চাই শুধু একটু প্রছার আর সঠীক পরীকল্পনা। আশারাখী কেউ না কৈউ বাংলার এই শীল্পটিকে রক্ষা করতে অবস্যই এগিয়ে আসবেন।
This is some thing Bengal has forgotten the most rich heritage art .Really lovely --perhaps I have heard the words after 40 years
ReplyDelete